তাপসকিরণ রায়ের কবিতা
আন্দোলিত কথাগুলি
~
যে শব্দ দিয়েছি তোমায়, যে ছবি দেশান্তর,
তা দিয়ে কবিতা বানিয়ে দাও বুক,
ছায়া নিয়ে ছায়াতীত ভাবনা,
ঝংকার নিয়ে সমস্ত গানের স্বরলিপি,
বাতাস নিয়ে বৈশাখী ঝড়,
মাটির ফাটলে উদাসী খরার চিত্র আঁকা আছে দেখো !
ঘূর্ণ ফুঁৎকারে তোমার চরিত্র আঁকা—
নৈর্ব্যক্তিক ভাবনার আন্দোলিত কথাগুলি
তোমার কবিতা হয়ে যায়।
ছেঁড়া ডানা
~
ডানা ছেঁড়া পাখিটিকে আর দেখি নি,
অথচ তার পাখার হাওয়া আজও গায়ে এসে লাগে,
প্রখর মধ্যাহ্নে লেখা কবিতাগুলি বড় কঠোর হয়েছে !
নিংড়ে তুমি উঠে এলে বাইরে,
এমনি পলাশী বসন্তে কতবার মিলেছি,
এমনি বারুদী গন্ধে এখানে ওখানে পালিয়ে বেড়িয়েছি।
সে সব কথকতা কালের শিথানে দাগ কাটা আছে।
সব কিছুই নাকি ভবিতব্য, তবু ভাগ্যপাখা বাঁচিয়ে ফিরি--
ফেরি করি জীবন গুজার !
জীবনে কখনও কিছু না কিছু লিখে দিয়েছি তোমার হাতে,
আজ অস্পষ্ট সে হলুদ খাম, ঝলসানো পাতায় তবু দেখ
সেই বিবর্ণ নাম, আজও তোমার অনুগ্রহে ছুঁয়ে আছে মন।
শব্দগুলি ভেঙে ভেঙে
~
শব্দগুলি ভেঙে ভেঙে ভগ্ন রণিত কবিতা,
বিবস্ত্র মাঠের বিবর্ণতা, কখনও অরাজক তোমার কবিতা চিত্রণ।
তোমার শব্দ গ্রহণ নৈঃশব্দ থেকে শুরু হয়।
যে কণ নখরে ছিঁড়ে এলো, বৈদূর্য সৃষ্টির ভাব তোমার অন্তঃস্থল।
ভেঙে ভেঙে টুকরো টুকরো যন্ত্রণা,
আগুন স্ফুলিঙ্গ ছিঁড়ে আমাদের লাল মুখ,
বাতাস শ্বাসে ধরে নিই জীবন,
আর জীবনের মানে জন্মান্তর বেলা--সমগ্র বিশালতা যখন
ধরা থাকে বিন্দুর মাঝে !
No comments:
Post a Comment